" কুন্তীদেবীর শিক্ষা " সুধি ভগবদ্ভক্তগণ কর্তৃক অতি সমাদৃত এই গ্রন্থ

কৃষ্ণকৃপাশ্রীমূর্তি শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ কর্তৃক মূল সংস্কৃত শ্লোক, অনুবাদ এবং বিশদ তাৎপর্যসহ ইংরেজি Teachings of Queen Kunti গ্রন্থের বাংলা অনুবাদ । অনুবাদক : শ্রীমদ্ সুভগ স্বামী মহারাজ

  • অকিঞ্চনের ধন

    শ্লোক: ১০
    নমোঽকিঞ্চনবিত্তায় নিবৃত্তগুণবৃত্তয়ে ।
    আত্মারামায় শান্তায় কৈবল্যপতয়ে নমঃ ॥ ১০ ॥
  • অনুবাদ : হে ভগবান তোমাকে প্রণাম জানাই । তুমি অকিঞ্চন ভক্তের সম্পদম্বরূপ। তুমি প্রকৃতির গুণের ক্রিয়া - প্রতিক্রিয়ার অতীত । তুমি আত্মারাম, তাই তুমি শান্ত ও কৈবল্যপতি । ( ভাঃ ১/৮/২৭ )
  • তাৎপর্যঃ- সম্পূর্ণ নিঃস্ব হওয়া মাত্র জীবাত্মাও অন্তিমদশা প্রাপ্ত হয় । তাই জীবাত্মা প্রকৃত অর্থে ত্যাগী হতে পারে না । আরও মূল্যবান কিছু প্রাপ্তির জন্যই জীব ত্যাগ করে । ছাত্র বিদ্যার্জনের উদ্দেশ্যে তার বালকোচিত চপলতা ত্যাগ করে । উচ্চতর চাকরির জন্যই কর্মচারী তার কর্ম ত্যাগ করে । সেই রকম , অর্থহীনভাবে কৃষ্ণভক্ত ভবসংসার ত্যাগ করেন না , পক্ষান্তরে পারমার্থিক বাস্তব কিছু প্রাপ্তির জন্য তিনি তা করেন । শ্রীল রূপ গোস্বামী , শ্রীল সনাতন গোস্বামী , শ্রীল রঘুনাথ দাস গোস্বামী ও অন্যান্যরা মুকুন্দসেবার উদ্দেশ্যে তাদের বিপুল বিষয় - বৈভব ও সমৃদ্ধি পরিত্যাগ করেছেন । লৌকিক বিচারে তারা ছিলেন বিশিষ্ট ব্যক্তি। গোস্বামীরা বাংলার নবাবের মন্ত্রী ছিলেন । শ্রীল রঘুনাথ দাস গোস্বামী তৎকালীন এক বিরাট জমিদারের পুত্র ছিলেন । অপেক্ষাকৃত শ্রেয় লাভের উদ্দেশ্যে পুর্বের সমস্ত কিছুই তারা পরিত্যাগ করেন । কৃষ্ণভক্তরা নিষ্কিঞ্চন হলেও , ভগবৎ - চরণারবিন্দে তাদের এক গোপনীয় রত্নভাণ্ডার আছে । এই বিষয়ে সনাতন গোস্বামী সম্বন্ধে একটি সুন্দর কাহিনী আছে । সনাতন গোস্বামীর একটি পরশমণি ছিল এবং তিনি মণিটি আবর্জনার স্তূপে নিক্ষেপ করেন । এক নির্ধন ব্যক্তি মণিটি সংগ্রহ করেন , কিন্তু বিস্মিত হয়ে ভাবেন , এই মূল্যবান মণিটি এই রকম পরিত্যক্ত স্থানে ফেলে রাখা হয়েছে কেন ? তাই সে সনাতন গোস্বামীর কাছে সবচেয়ে মূল্যবান বস্তু কামনা করল । তখন সনাতন গোস্বামী তাকে পবিত্র হরিনাম দান করেন । অকিঞ্চন শব্দের অর্থ হচ্ছে ' দেওয়ার মতো জড় সম্পদ যাঁর কিছুই নেই । যথার্থ কৃষ্ণভক্ত বা মহাত্মা কাউকে জড় বস্তু দেন না , কারণ তিনি ইতিমধ্যেই সব জড় সম্পদ ত্যাগ করেছেন । কিন্তু তিনি পরম সম্পদ ভগবান শ্রীহরিকে প্রদান করতে পারেন , কারণ অকৃত্রিম ভগবদ্ভক্তের তিনিই একমাত্র সম্পদ । আবর্জনায় নিক্ষিপ্ত সনাতন গোস্বামীর পরশমণিটি সনাতন গোস্বামীর সম্পত্তি নয় , নয়তো তিনি মণিটি ঐরকম স্থানে রাখতেন না । বিষয়তৃষ্ণা ও পারমার্থিক উন্নতি একই সঙ্গে চলতে পারে না । এই সম্পর্কে বিশ্বাস উৎপাদনের জন্য নবীন কনিষ্ঠ অধিকারী ভক্তকে এই বিশেষ দৃষ্টান্ত দেওয়া হয় । ভগবৎ - সম্বন্ধে সব কিছু চিন্ময় দেখতে সমর্থ না হলে , চিৎ ও পদার্থের মধ্যে সর্বদাই ভেদ নিরূপণ করা কর্তব্য । শ্রীল সনাতন গোস্বামীর মতো একজন আচার্য ব্যক্তিগতভাবে সব কিছুই চিন্ময় দেখতে সক্ষম হলেও একমাত্র আমাদের জন্যই তিনি এই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন , কেন না আমাদের সেই রকম দিবাদৃষ্টি নেই ।

       পারমার্থিক উন্নতিমার্গে জড় সভ্যতা অথবা জড় দৃষ্টির অগ্রগতি এক বিরাট প্রতিবন্ধক । এই রকম জড় প্রগতি জীবাত্মাকে জড় দেহের বন্ধনে আবদ্ধ করে নানা সংসারক্লেশ ভোগ করায় । এই রকম জড় প্রগতিকে অনর্থ বা অবাঞ্ছিত বলা হয় । বাস্তবিক এগুলি তা - ই বর্তমান জড় উন্নতির প্রসঙ্গে বলা যায় , একজন পাঁচ টাকার একটি লিপস্টিক ক্রয় করেন , এই রকম জড় বুদ্ধি থেকে উৎপন্ন কত অবাঞ্ছিত দ্রব্য রয়েছে নানা অনর্থে অভিনিবেশের ফলে মানব জীবনের পরম প্রয়োজন পরমার্থ সাধন না করায় জীবন নিষ্ফল হচ্ছে । চন্দ্রের অভিযান আমাদের শক্তি অপচয়ের আর একটি দৃষ্টান্ত , কেন না চন্দ্রে পৌছালেও আমাদের জীবনের সমস্যার সমাধান হবে না । ভগবক্তদের অকিঞ্চন বলা হয় , কারণ বস্তুত তারা জড় সম্পদহীন । সেই জড় সম্পদ সবই গুণময় প্রকৃতিজাত জড় সম্পদ ভক্তের পারমার্থিক শক্তিকে নিষ্ফল ও ব্যর্থ করে , এবং এইভাবে যত কম জড় প্রকৃতিজাত সম্পদ আমাদের থাকে , ততই পারমার্থিক উন্নতির সম্ভাবনা অধিক হয় ।

       পরমেশ্বর ভগবানের সঙ্গে জড় কর্মের সরাসরি কোন যোগাযোগ নেই । জড় জগতে প্রকাশিত তার সকল ভৌম লাই চিন্ময় এবং জড় গুণাতীত । ভগবদ্‌গীতায় ভগবান বলেছেন যে , তার সকল কর্ম , এমন কি ভৌম জগতে তার অবতরণ ও অন্তর্ধান সকলই দিব এবং যিনি তত্ত্বত এটি অবগত হন , তিনি ভব সংসারে পুনরায় জন্মগ্রহণ করবেন না , পক্ষান্তরে তিনি ভগবদ্ধামে প্রত্যাবর্তন করবেন । জড়া প্রকৃতির উপর কর্তৃত্ব ও বিষয় তৃষ্ণাই ভবরোগের কারণ । জড়া প্রকৃতির রিগুণের প্রতিক্রিয়ার ফলে এই বিষয় - তৃষ্ণার উদয় হয় । ভগবান বা ভগবদ্ভক্ত কারো মিথ্যা বিষয়ভোগে আসক্তি নেই । তাই কৃষ্ণ ও কৃষ্ণভক্তদের নিবৃত্তগুণবৃত্তি বলা হয় । পূর্ণ নিবৃত্তগুণবৃত্তি হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান , কেন না তিনি কখনও প্রকৃতির গুণে বিমোহিত হন না , কিন্তু জীবাত্মাদের প্রকৃতির গুণে বিমোহিত হওয়ার প্রবণতা রয়েছে । তাদের কেউ কেউ প্রকৃতির মায়িক আকর্ষণে আবদ্ধ হয়ে পড়ে ।

       যেহেতু ভগবান ভক্তের হৃদয়ের ধন এবং বিনিময়ে ভক্তরাও ভগবানের হৃদয়ের ধন লাভ করেন , তাই ভগবদ্ভক্তরা নিঃসন্দেহে গুণাতীত । এটিই স্বাভাবিক সিদ্ধান্ত । এই রকম অনন্য ভগবদ্ভক্ত , আর্ত , অর্থার্থী , জিজ্ঞাসু ও জ্ঞানী ভক্ত থেকে ভিন্ন রকম । অনন্য ভগবদ্ভক্ত ও ভগবান দিব্যভাবে পরস্পরে আসক্ত । অন্যান্যদের সাথে ভগবানের কোন বিনিময় হয় না , এই জন্য তাকে আত্মারাম বলা হয় । যথাযথ আত্মারাম , ভগবান হচ্ছেন তার সত্তায় বিলীন হতে ইচ্ছুক অদ্বৈতবাদীদের কৈবল্যপতি । এইরকম অদ্বৈতবাদীরা ব্রহ্মজ্যোতি নামে ভগবানের শ্রীঅঙ্গজ্যোতিতে বিলীন হয় । কিন্তু ভগবদ্ভক্তরা ভগবানের অপ্রাকৃত নিত্যলীলায় প্রবেশ করেন । এই নিত্যলীলাকে অনিত্য জড় বলে বিভ্রান্ত হওয়া উচিত নয় ।

       নিষ্কিঞ্চনতাই ভগবদ্ভক্তের প্রথম যোগ্যতা । ভব সংসারে যিনি নিঃস্ব , শুধু শ্রীকৃষ্ণই যাঁর প্রাণধন , তাঁকে অকিঞ্চন বলা হয় । অকিঞ্চন শব্দের অর্থ ' যিনি সমস্ত জড় বিষয় সম্পদহীন ” । যে কোনভাবে জড় সুখলাভের ক্ষীণতম আশা থাকলেও আমাদের জড় দেহ গ্রহণ করতে হবে । প্রকৃতি এতই করুণাময়ী যে , যেভাবে আমরা এই ভব সংসার ভোগ করতে চাই , ভগবৎ - নির্দেশে তিনি তার উপযোগী একটি দেহ আমাদের প্রদান করবেন । যেহেতু ভগবান সকলের হৃদয়ে অবস্থিত , তাই তিনি সর্বজ্ঞ । অতএব আমাদের এখনও জড় বাসনা রয়েছে জেনে , তিনি আমাদের জন্য আর একটি জড় দেহ প্রদান করবেন— “ হ্যা , এই নাও । ” শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছা আমরা পূর্ণ অভিজ্ঞতা প্রাপ্ত হই , যাতে আমরা হৃদয়ঙ্গম করতে পারি যে , জড় বিষয়ভোগের মাধ্যমে কখনও সুখী হওয়া যায় না । এটি হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছা ।

       পরম স্বতন্ত্র শ্রীকৃষ্ণের অংশবিশেষ হওয়ায় , আমরাও স্বতন্ত্র , কিন্তু সেই স্বতন্ত্রতা একবিন্দু সমুদ্রজলে লবণের পরিমাণ সমগ্র সমুদ্রের লবণের অণু পরিমাণ । পরিমাণের সঙ্গে তুলনীয় না হলেও , উভয়েরই রাসায়নিক সংগঠন এক । সেই রকম , অণুপরিমাণ যা কিছু আমাদের মধ্যে রয়েছে , তা পূর্ণভাবে শ্রীকৃষ্ণেও রয়েছে ( জন্মাদ্যস্য যতঃ ) । যেমন , অন্যের দ্রব্য অপহরণের প্রবণতা আমাদের মধ্যে রয়েছে । কেন ? কারণ কৃষ্ণেরও এই প্রবৃত্তি আছে । অদ্বয়তত্ত্ব পূর্ণরহ্মে এই অপহরণ প্রবণতা না থাকলে , আমাদের মধ্যে এই বৈশিষ্ট্য থাকবে কিভাবে ? শ্রীকৃষ্ণ ' মাখন চোর ' নামে বিখ্যাত । কিন্তু শ্রীকৃষ্ণের চৌর্যলীলা ও আমাদের চৌর্যকর্মের মধ্যে অনেক প্রভেদ আছে । আমরা জড় কলুষতায় মলিন হওয়ায় আমাদের চৌর্যকর্ম নিন্দনীয় , অথচ চিন্ময় স্তরে সেই চৌর্যকমই এমন মধুর যে , তা আস্বাদনীয় ও উপভোগ্য । তাই মা যশোদা কৃষ্ণের মধুর চৌর্যলীলা উপভোগ করেন । এখানেই চিন্ময় ও জড় কর্মে পার্থক্য ।

       যে কোন চিন্ময় কর্মই সর্বশুভ , এবং যে কোন জড় কমই সর্বতোভাবে অশুভ । এখানেই চিন্ময় ও জড়ের মধ্যে প্রভেদ । তথাকথিত নীতি ও জড় জাগতিক মঙ্গল সবই অশুভ , কিন্তু চিৎ - জগতে তথাকথিত নীতিহীনতাও শুভ । এটি আমাদের হৃদয়ঙ্গম করতে হবে । যেমন , গভীর রাতে পরস্ত্রীদের সঙ্গে নৃত্য করা নীতি বিগর্হিত অন্তত বৈদিক সভ্যতা অনুযায়ী । এমন কি আজও ভারতবর্ষে একজন যুবতীকে গভীর রাতে অন্য এক যুবকের সঙ্গে নৃত্য করতে দেওয়া হবে না । কিন্তু আমরা শ্রীমদ্ভাগবতে দেখব যে , শ্রীকৃষ্ণের মধুর বংশীনাদ শ্রবণমাত্র সকল ব্রজবালিকারা তার সঙ্গে নৃত্য করতে এসেছিল । লৌকিক ধারণা অনুসারে এই কাজ নীতিগর্হিত হলেও পারমার্থিক বিচারে এই কাজ নীতির পরাকাষ্ঠা । তাই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেন , রম্যা কাচিদ্ উপাসনা ব্রজবধূবর্গেণ যা কল্পিত-- “ ব্রজবধূদের উপাসনা পন্থা অপেক্ষা শ্রেয় কোন ভজনমার্গ আর হতেই পারে না । শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু সন্ন্যাস - আশ্রম গ্রহণ করার পর , তিনি অত্যন্ত কঠোরভাবে । স্ত্রীলোকের সান্নিধ্য বর্জন করেছেন । এমন কি গৃহস্থ আশ্রমেও তিনি কখনও স্ত্রীলোকদের সঙ্গে হাস্য - কৌতুক উপভোগ করেননি । তিনি খুবই কৌতুকপ্রিয় , রসিক হলেও শুধু পুরুষদের সঙ্গেই হাস্য - কৌতুক উপভোগ করতেন , নারীদের সঙ্গে নয় । একসময় তিনি তার স্ত্রী বিষ্ণুপ্রিয়ার সঙ্গে কিছু কৌতুককর কথোপকথন করেন । শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর মা শচীমাতা একসময় কিছু অন্বেষণ করছিলেন , তখন তিনি কৌতুকচ্ছলে বলেছিলেন , “ তোমার বৌমা হয়ত ওটি নিয়েছে । ” কিন্তু তার সমগ্র জীবনে স্ত্রীলোক সম্পর্কে এই একমাত্র কৌতুকজনক কথা তাকে বলতে দেখা যায় । তিনি এই বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর ছিলেন । সন্ন্যাস আশ্রম গ্রহণের পর , এমন কি প্রণাম জানাতেও কোন স্ত্রীলোক তার কাছে আসতে পারত না । পক্ষান্তরে দূর থেকে স্ত্রীলোকেরা তাকে প্রণাম করত । তবুও শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন , রম্যা কাচিদ্ উপাসনা ব্রজবধূবর্গেণ যা কল্পিতা “ ব্রজবধূগণের কৃষ্ণোপাসনা অপেক্ষা শ্রেয় কোন উপাসনা কল্পনাতীত । ” ব্রজবধূদের কল্পনা কি ? চরম বিপদের ঝুঁকি নিয়েও তারা শ্রীকৃষ্ণকে ভালবাসতে চেয়েছিলেন । আর এই ভগবৎপ্রেম কখনও নীতি - বিগর্হিত হতে পারে না ।

       যা কৃষ্ণ সম্বন্ধযুক্ত তা কখনও নীতিগর্হিত হতে পারে না । আর একটি উদাহরণ দেওয়া যায় — শ্রীকৃষ্ণ তাঁর অবতার শ্রীনৃসিংহদেবরূপে প্রহ্লাদ মহারাজের । পিতা হিরণ্যকশিপুকে বধ করেন , কিন্তু প্রহ্লাদ মহারাজ কোন রকম প্রতিবাদ না করে সেখানেই দাঁড়িয়েছিলেন । এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই কাজ কি নীতিসম্মত ? কে - ই বা পিতৃহত্যা দর্শন করতে চায় ? কেই বা তা দেখে শুধু দাঁড়িয়ে থাকবে , অথচ কোন প্রতিবাদ করবে না ? কেউই এই রকম আচরণ অনুমোদন করবে না , এবং কেউ - ই এই কাজ নীতিসম্মত বলবে না । তবু বস্তুত এটিই ঘটল । শুধু তাই নয় , প্রহ্লাদ মহারাজ তাঁর পিতৃহত্যাকারীর গলায় পরাবার জন্য একটি মালা তৈরি করেন । তিনি বলেছেন , “ হে ভগবান , হে নিধনকারী , আপনি এই মালাটি গ্রহণ করুন । আপনি আমার পিতাকে বধ করেছেন , আপনি মঙ্গলময় । ” এই পারমার্থিক বিচার উপলব্ধি করতে হবে । পিতা আক্রান্ত হলে , পিতাকে রক্ষা করতে না পারলে , প্রতিবাদ করে সাহায্যের জন্য আর্তস্বরে চিৎকার করা উচিত । কিন্তু শ্রীনৃসিংহদেবরূপে শ্রীকৃষ্ণ দ্বারা প্রহ্লাদ মহারাজের পিতা নিহত হলে , প্রহ্লাদ মহারাজ নিধনকারীর জন্য একটি মালা তৈরি করেন । পিতার মৃত্যু হলে প্রহ্লাদ শ্রীনৃসিংহদেবকে অনুরোধ করে বলেন , “ হে ভগবান , আমার পিতা নিহত হওয়ায় সকলেই সুখী । এখন কৃপা করে আপনি ক্রোধ সংবরণ করুন । ”

       প্রকৃত সাধু জীবহত্যা অনুমোদন করেন না , এমন কি পশুহত্যাও অনুমোদন করেন না । কিন্তু প্রহ্লাদ মহারাজ বলেছেন , মদেত সাধুরণি বৃশ্চিকসপ হত্যা “ বৃশ্চিক বা সর্প হননে সাধুও খুশি হন । " বৃশ্চিক ও সর্গ জীবাত্মা এবং অন্য জীবনিধনে সাধু কখনও খুশি হন না । কিন্তু প্রহ্লাদ মহারাজ বলেছেন , “ সর্গ অথবা বৃশ্চিক হননে সাধুও খুশি হন । আমার পিতা ঠিক সর্প অথবা বৃশ্চিকের মতোই ছিলেন এবং তাই তাঁকে বধ করা হলে সকলেই খুশি । ” হিরণ্যকশিপু ছিল এক ভয়ঙ্কর অসুর । সে ভগবদ্ভক্তদের উৎপীড়ন ও অত্যাচার করত । সাধারণত কারো মৃত্যু কামনা না করলেও এই রকম অসুর নিধনে সাধুরাও খুশি হন । তাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও প্রহ্লাদ মহারাজের কাজ নীতিশূন্য প্রতিভাত হলেও , বস্তুত তা নৈতিকতার পরাকাষ্ঠা ।

       শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন অকিঞ্চনবিত্ত । শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন নিঃস্বের একমাত্র সান্ত্বনা । শ্রীচৈতন্য চরিতামৃতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন , “ যে আমাকে লাভ করতে চায় , সেই সঙ্গে বিষয় - সম্পদও কামনা করে , সে মুঢ় । " শ্রীকৃষ্ণ এমনই করুণাময় যে ,

       কেউ বিষয় - সম্পদ কামনা করে একই সঙ্গে কৃষ্ণভক্ত হতে চাইলে , শ্রীকৃষ্ণ তার সংসার জীবনকে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ করে দেন। তাই কৃষ্ণভাবনাময় আন্দোলনে যোগদানে লোকেরা খুবই দ্বিধাগ্রস্তু , তারা মনে মনে ভাবে , “ ওঃ , আমার বৈষয়িক উন্নতি বিনষ্ট হবে । ”

       সাধারণত লোকেরা গির্জা অথবা মঠ - মন্দিরে ভগবানের কাছে বৈষয়িক উন্নতির প্রার্থনা করতে যায়— “ হে ভগবান , আমাদের প্রাত্যহিক আহার্য দান করুন । ” যদিও তারা “ আমাদের এটা দিন , আমাদের ওটা দিন " বলে ভৌতিক সমৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ভগবানের শরণাগত হলেও তাদের পুণ্যবান বলে গণ্য করতে হবে , কারণ তারা ভগবৎ - শরণাপন্ন । অথচ নাস্তিকরা কখনও ভগবান শ্রীহরির শরণাগত হয় না । নাস্তিক বলে , “ আমি ভগবানের শরণাপন্ন হব কেন ? আমি নিজেই আমার সম্পদ সৃষ্টি করব , এবং বিজ্ঞানের প্রগতির দ্বারা আমি সুখী হব । " যে মনে করে , “ আমার উন্নতির জন্য আমি নিজ শক্তি - সামর্থ ও জ্ঞানের উপর নির্ভরশীল , " সে একজন দুষ্কৃতী বা পাপী । কিন্তু যিনি মনে করেন , “ আমার উন্নতি ভগবৎ - কৃপার উপর নির্ভরশীল " , তিনি নিঃসন্দেহে পুণ্যাত্মা ।

       বস্তুতপক্ষে ভগবানের অনুমোদন ছাড়া কিছুই অর্জন করা সম্ভব নয় । তাবৎ তনুরিদং তনুপেক্ষিতানাম্ । সংসারক্লেশের অবসান ঘটাতে আমরা নানা উপায় উদ্ভাবন করেছি , কিন্তু এই রকম ক্লেশমোচন ভগবৎ - অনুমোদিত না হওয়ায় , এই সকল প্রয়াস ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে । যেমন , একজন রুগ্ন ব্যক্তির ভাল ওষুধ ও যোগ্য চিকিৎসক থাকতে পারে । কিন্তু আমরা যদি চিকিৎসককে জিজ্ঞাসা করি , " এই রোগীর জীবনরক্ষায় আপনি নিশ্চিত প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন ? ” চিকিৎসক উত্তর দিবেন , “ না , আমি তা পারি না । আমার সাধ্যমতো আমি চেষ্টা করতে পারি , এই পর্যন্ত । ” বুদ্ধিমান চিকিৎসক জানেন , “ ভগবানের হাতেই সব কিছুর অন্তিম সাফল্য নির্ভর করে । আমি যন্ত্রমাত্র। রোগীর জীবনরক্ষা ভগবানের অনভিপ্রেত হলে , আমার সব ওষুধ ও আমার চিকিৎসা বিজ্ঞানের সমস্ত জ্ঞানই ব্যর্থ হবে । " অতএব ভগবান শ্রীকৃষ্ণই পরম অনুমোদনকারী। নির্বোধেরাই এই কথা জানে না এবং তাই তাদের মুঢ় বলা হয় । তারা অবগত নয় যে , ভাল যা কিছুই তারা করুক , ভগবৎ - অনুমোদিত না হলে , শ্রীকৃষ্ণের অনুমোদন না হলে , তা নিষ্ফল হবে । পক্ষান্তরে ভক্ত জানেন যে , তার যতটুকু বুদ্ধি আছে , তার দ্বারা তিনি সুখী হওয়ার চেষ্টা করতে পারেন , কিন্তু কৃষ্ণের অনুমোদন ছাড়া তিনি কখনও সুখী হবেন না । ভক্ত ও অভক্তের মধ্যে এই পার্থক্য ।

       পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে , যেখানে শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন , “ যে ব্যক্তি কৃষ্ণভক্ত হওয়ার জন্য ভগবানের শরণাপন্ন হয় , কিন্তু সেই সঙ্গে বিষয়সুখ কামনা করে , সে বুদ্ধিমান নয় । সে শুধু কালক্ষয় করছে । " আমাদের প্রধান কর্তব্য কৃষ্ণভক্ত হওয়া । এটি মানব - জীবনের প্রধান কাজ । জড় সমৃদ্ধির প্রয়াসে কালক্ষয় করে ' হরেকৃষ্ণ কীর্তন ' বিস্মৃত হলে , এক বিরাট ক্ষতি হবে । তাই শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন , ‘ আমি বিজ্ঞ , এই মুর্খে , ' বিষয় ' কেনে দিব ? ' ( চৈঃ চঃ মধ্য ২২/৩৯ ) – “ সেবার বিনিময়ে এক মুঢ় আমার কাছে বৈষয়িক উন্নতি কামনা করতে পারে , কিন্তু আমি তাকে জড় সমৃদ্ধি প্রদান করব কেন ? পক্ষান্তরে , তার যথাসর্বস্ব আমি অপহরণ করব । "

       আমাদের জড় সম্পদ সবই অপহৃত হলে , আমরা বিমর্ষ হয়ে পড়ি । কিন্তু এটি হচ্ছে পরীক্ষা । স্বয়ং কৃষ্ণই মহারাজ যুধিষ্ঠিরকে এই কথা বলেছেন । যুধিষ্ঠির মহারাজ শ্রীকৃষ্ণকে জিজ্ঞাসা করেন , “ আমরা সম্পূর্ণভাবে তোমার শরণাগত , তোমার উপর নির্ভরশীল , কিন্তু তবুও আমরা অশেষ সংসার - ক্লেশ ভোগ করছি । আমাদের রাজ্য গ্রাস করা হয়েছে , আমাদের পত্নীকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে , এবং শত্রুরা স্বগৃহে আমাদের দহন করার প্রয়াস করেছে । কিভাবে এই সব ঘটনা সম্ভব হয়েছে ? শ্রীকৃষ্ণ উত্তর দেন , যস্যাহমনুগৃহ্নামি হরিয্যে তদ্ধনং শনৈঃ “ হ্যাঁ , সেটি আমার প্রথম কাজ । যাকে আমি বিশেষ কৃপা করি , আমি তার সর্বস্ব অপহরণ করে তাকে চরম বিপদে নিপতিত করি । " এভাবে শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন অত্যন্ত ভয়ঙ্কর ।

       এই সম্পর্কে আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা আছে । আমি এই সমগ্ৰ কাহিনীটি বর্ণনা করতে ইচ্ছা করি না , কিন্তু এটি সত্য যে , এভাবেই আমি শ্রীকৃষ্ণের বিশেষ কৃপা প্রাপ্ত হই । যখন আমার বয়ঃক্রম পঁচিশ , তখন আমার শুরুমহারাজ আমাকে কৃষ্ণভাবনা প্রচারের আদেশ দেন । কিন্তু আমি ভেবেছিলাম , “ আমি প্রথমে একজন ধনী ব্যক্তি হয়ে , ঐ ধন দ্বারা হরিকথা প্রচার করব । ” খুব ধনী ব্যবসায়ী হওয়ার আমার সুবর্ণ সুযোগ ছিল । একজন জ্যোতিষী পর্যন্ত আমাকে বলেছিলেন যে , আমি ভারতের সবচেয়ে ধনীর মতো ধনাঢ্য হব । তার চমৎকার সুযোগও ছিল । আমি একটি বিরাট রাসায়নিক কারখানার পরিচালক ছিলাম । আমি নিজের কারখানা খুলি এবং ব্যবসাও খুবই সাফল্যজনক ছিল । কিন্তু ঘটনাক্রমে সব কিছুই বিনষ্ট হয় এবং এভাবে আমার গুরুদেবের আদেশ পালনে আমি বাধ্য হই । আমার বিষয় সম্পদ সর্বস্ব চলে গেলে , “ তুমিই একমাত্র আশ্রয় " বলে আমি শ্রীকৃষ্ণের শরণাগত হই । তাই শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন অকিঞ্চনবিত্ত , তিনি অকিঞ্চনের সর্বস্ব - ধন । কেউ সম্পূর্ণভাবে বিষয় - বৈভবশূন্য হলে , তখন তিনি কৃষ্ণোন্মুখ হন , শ্রীকৃষ্ণের শরণাপন্ন হন । এখন আমি উপলব্ধি করছি যে , আমি কিছুই হারাইনি , সবই পেয়েছি ।

       সুতরাং শ্রীকৃষ্ণের সুখান্বেষণে , কৃষ্ণের সেবার জন্য বিষয় সম্পদ হারানোটা আদৌ ক্ষতিকর নয় । পক্ষান্তরে , সেটিই সবচেয়ে বড় লাভ , সর্বোত্তম প্রাপ্তি । যখন কেউ অকিঞ্চন হন , নিঃস্ব হন শ্রীকৃষ্ণই তখন তার একমাত্র ধন - সম্পদ হন । এই উপলব্ধি প্রকাশ করে , শ্রীনরোত্তম দাস ঠাকুর গান গেয়েছেন—

    হা হা প্রভু নন্দসুত ,       বৃষভানুসুতাযুত ,
         করুণা করহ এইবার ।
    নরোত্তমদাস কয় ,       না ঠেলিহ রাঙ্গা পায় ,
         তোমা বিনা কে আছে আমার ।

    “ হে কৃষ্ণ, তোমার কাছে আমার কোন প্রার্থনা নেই । আমি নিঃস্ব । তুমি আমার একমাত্র ধন , তাই কৃপা করে আমাকে অবহেলা করো না । ”

       এই অবস্থা খুবই সুন্দর , কেউ যখন কোন বিষয় সম্পদে নির্ভরশীল নন , কিন্তু একমাত্র শ্রীকৃষ্ণের উপর নির্ভরশীল , তখন তিনি কৃষ্ণভাবনায় সর্বোত্তম অবস্থা প্রাপ্ত হয়েছেন । তাই শ্রীকৃষ্ণকে অকিঞ্চনবিত্ত বলা হয়েছে । “ তুমিই হচ্ছ অকিঞ্চন ব্যক্তির একমাত্র সম্পদ । " নমোঽকিঞ্চনবিত্তায় নিবৃত্তগুণবৃত্তয়ে “ তোমাকে জীবন- সর্বস্বরূপে গ্রহণ করলে অচিরেই জড় গুণ থেকে নির্মুক্ত হওয়া যায় । পক্ষান্তরে বলা যায় , এভাবে শ্রীকৃষ্ণকে গ্রহণের মাধ্যমে ব্রহ্মভূত স্তরে অধিষ্ঠিত হওয়া যায় । আত্মারামায়— “ তখন তোমার সান্নিধ্যে সুখী হওয়া যায় । কৃষ্ণ , তুমি নিজেকে নিয়েই তুষ্ট , এবং তোমার শরণাগত ব্যক্তি তোমার মতো সুখ অনুভব করে । শ্রীকৃষ্ণের দিব্য দেহ ও শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং অভিন্ন । শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন আত্মাময় , তিনিই নিখিল আত্মা । পক্ষান্তরে , আমরা আমাদের জড় দেহ থেকে ভিন্ন তত্ত্ব । আমি আত্মা , কিন্তু আমি জড় দেহধারী । শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন আত্মারাম কিন্তু আমরা যথার্থভাবে কৃষ্ণে শরণাগত হলে , শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে আমরাও আত্মারাম হতে পারি ।

       কৈবল্যপতয়ে নমঃ । মায়াবাদী দার্শনিকরা বা অদ্বৈতবাদী ব্যক্তিরা ব্রহ্মে লীন হতে চায় । ব্রহ্মা হচ্ছে আত্মারাম, সেই ব্রহ্মে বিলীন হয়ে তারাও আত্মারাম হতে চায় । আমাদের কৃষ্ণভাবনামৃত দর্শনও একই , কিন্তু শ্রীকৃষ্ণে বিলীন হওয়ার পরিবর্তে আমরা কৃষ্ণে শরণাগতি প্রার্থনা করি । সেটিই প্রকৃত একত্ব । শ্রীকৃষ্ণের বিরোধিতা না করে শুধু শ্রীকৃষ্ণের আদেশ পালনে স্বীকৃত হলে , আমরা পরমব্রহ্মের সঙ্গে প্রকৃত একত্বে অধিষ্ঠিত হব ।

       মায়াবাদী দার্শনিকেরা ভাবে , “ আমরা স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আমি রাখব কেন ? আমি ব্রহ্মে লীন হব । ” কিন্তু তা সম্ভব নয় । প্রথম থেকেই আমরা ভগবানের বিভিন্ন অকিঞ্চনের ধন অংশ । তাই শ্রীকৃষ্ণ ভগবদ্গীতায় বলেছেন— “ প্রিয় অর্জুন , কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রে সমবেত আমি , তুমি , ও উপস্থিত সকলেরই পূর্বে স্বতন্ত্র সত্তা ছিল , বর্তমানে আমরা তাই আছি এবং ভবিষ্যতেও আমরা সকলে স্বতন্ত্র সত্তা নিয়েই থাকব । ”

       নিত্যো নিত্যানাং চেতনশ্চেতনানাম্ । অসংখ্য চেতনশক্তির মধ্যে শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরম নিত্য , পরম চেতন শক্তি । আমরা জীবেরা সংখ্যায় অনন্ত আমরা সংখ্যাতীত । সেই রকম শ্রীকৃষ্ণও একজন জীব , কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন প্রধান , পরম জীব । সেটিই পার্থক্য । এক নেতার যেমন অনেক অনুগামী থাকে । সেই রকম , পরম শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরম নেতা এবং আমরা জীবকুল হচ্ছি শ্রীকৃষ্ণের শরণাগত , অধীনতত্ত্ব । শ্রীকৃষ্ণের উপর আমাদের নির্ভরশীলতা হৃদয়ঙ্গম করা খুব কঠিন নয় । শ্রীকৃষ্ণ আমাদের আহার্য যোগান না দিলে আমরা অনাহারে থাকব । কারণ , স্বাধীনভাবে আমরা কিছুই তৈরি করতে সক্ষম নই । একো বহুনাং যো বিদধাতি কামান্— শ্রীকৃষ্ণ সবকিছু প্রতিপালন করছেন , এবং আমরা তাঁর দ্বারা প্রতিপালিত হচ্ছি । তাই শ্রীকৃষ্ণই যথার্থ পরমেশ্বর , এবং তাঁর আনুগত্য আমাদের স্বীকার করা উচিত । সেটিই আমাদের স্বাভাবিক স্বরূপের অবস্থান । কৃত্রিম পন্থায় এই জড় জগতের সর্বময় কর্তা হওয়ার প্রয়াস , মোহাচ্ছন্ন ছাড়া আর কিছু নয় । মোহ বর্জন করে সর্বদা শ্রীকৃষ্ণের আনুগত্য স্বীকার করা কর্তব্য । তখন আমাদের জীবন সফল হবে ।

  • এখন দেখতে পারেন => " কুন্তীদেবীর শিক্ষা " গ্রন্থের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ১১ ) পরা প্রকৃতির সংস্পর্শে –
  • * * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।   আপনাদের পোস্ট করা লেখাগুলো এই লিংকে আছে, দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ * * *

    জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , শেয়ার করে প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন।