সনাতন ধর্মের সুনির্বাচিত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু শ্লোকঃ-

জ্ঞান-ই শক্তি ! নিজের ধর্ম সম্পর্কে আগে ভালোভাবে জানুন এবং অন্যকেও জানতে উৎসাহিত করুন।

আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

অভক্ত সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

  • শ্লোক: 1

    অর্চ্যে বিষ্ণৌ শিলাধীর্গুরুষু নরমতির্বৈষ্ণবে জাতিবুদ্ধি-
    র্বিষ্ণোর্বা বৈষ্ণবানাং কলিমলমথনে পাদতীর্থেহম্বুবুদ্ধিঃ ।
    শ্রীবিষ্ণোর্নাম্নিমন্ত্রে সকলকলুষহে শব্দসামান্যবুদ্ধি-
    র্বিষ্ণৌ সর্বেশ্বরেশে তদিতরমসধীর্যস্য বা নারকী সঃ ।।
    (পদ্ম পুরাণ)
  • অনুবাদঃ- যে ব্যক্তি পরমেশ্বর ভগবানের শ্রীবিগ্রহকে পাথর, কাঠ বা ধাতু-নির্মিত বলে মনে করে, ভগবানের নিত্য পার্ষদ শ্রীগুরুদেবকে একজন সাধারণ মরণশীল মানুষ বলে গণ্য করে, বৈষ্ণব ভক্তকে কোন বিশেষ জাতির অন্তর্ভুক্ত বলে মনে করে, কিংবা কলিযুগের সমস্ত কলুষ নাশ করতে সক্ষম বিষ্ণু বা বৈষ্ণবের চরণধৌত জলকে সাধারণ জল বলে মনে করে, সকল কলুষ হরণকারী ভগবানের পবিত্র নাম বা ভগবান সম্বন্ধীয় মন্ত্রকে সাধারণ শব্দের সমতুল্য বলে মনে করে এবং সর্বেশ্বরেশ্বর বিষ্ণুকে দেবতাদের সমকক্ষ বলে মনে করে, সেই ব্যক্তি নারকীয় বুদ্ধির অধিকারী। যে ব্যক্তি এভাবেই চিন্তা করে, সে নিঃসন্দেহে নরকের বাসিন্দা।

  • শ্লোক: 2

    নেহ যৎকর্ম ধর্মায় ন বিরাগায় কল্পতে ।
    ন তীর্থপদসেবায়ৈ জীবন্নপি মৃতো হি সঃ ।।
    (ভাগবত ৩/২৩/৫৬)
  • অনুবাদঃ- যে ব্যক্তির কর্ম তাকে ধর্মাভিমুখী করে না, যার ধর্ম অনুষ্ঠান জড় বিষয়ের প্রতি বিরক্তি উৎপাদন করে না এবং যার বৈরাগ্য পরমেশ্বর ভগবানের প্রতি প্রেমময়ী সেবায় পর্যবসিত হয় না, সেই ব্যক্তি জীবিত হলেও মৃত।

  • শ্লোক: 3

    ভগবদ্ভক্তিহীনস্য জাতিঃ শাস্ত্রং জপস্তপঃ ।
    অপ্রাণস্যেব দেহস্য মণ্ডনং লোকরঞ্জনম্ ।।
    (হরিভক্তিসুধোদয় ৩/১১/১২)
  • অনুবাদঃ- ভগবদ্ভক্তিহীন ব্যক্তির উচ্চকুলে জন্ম, শাস্ত্রজ্ঞান, জপ ও তপ, মৃতদেহের অলঙ্কারের মতো কোন কাজেরই নয়, কেবল লোকরঞ্জন মাত্র।

  • শ্লোক: 4

    শ্রোতব্যাদীনি রাজেন্দ্র নৃণাং সন্তি সহস্রশঃ ।
    অপশ্যতামাত্মতত্ত্বং গৃহেষু গৃহমেধিনাম্ ।।
    (ভাগবত ২/১/২)
  • অনুবাদঃ- হে রাজশ্রেষ্ঠ ! আত্ম-তত্ত্বজ্ঞান আলোচনায় উদাসীন, বিষয়াসক্ত গৃহমেধীদের অসংখ্য শ্রবণীয়, কীর্তনীয় ও স্মরণীয় বিষয়সমূহ আছে।

  • শ্লোক: 5

    নিদ্রয়া হ্রিয়তে নক্তং ব্যবায়েন চ বা বয়ঃ ।
    দিবা চার্থেহয়া রাজন্ কুটুম্বভরণেন বা ।।
    (ভাগবত ২/১/৩)
  • অনুবাদঃ- এই প্রকার মাৎসর্য পরায়ণ গৃহমেধীরা নিদ্রামগ্ন হয়ে অথবা রতিক্রিয়ায় তাদের রাত্রি অতিবাহিত করে এবং আত্মীয়-স্বজনদের প্রতিপালনের জন্য অর্থ উপার্জনের চেষ্টায় দিবাভাগের অপচয় করে।

  • শ্লোক: 6

    দেহাপত্যকলত্রাদিষ্বাত্মসৈন্যেষ্বসৎস্বপি ।
    তেষাং প্রমত্তো নিধনং পশ্যন্নপি ন পশ্যতি ।।
    (ভাগবত ২/১/৪)
  • অনুবাদঃ- আত্ম-তত্ত্বজ্ঞান রহিত ব্যক্তিরা দেহ, পুত্র, পত্নী আদি অনিত্য সৈন্যদের প্রতি অত্যন্ত আসক্ত হয়ে জীবনের প্রকৃত সমস্যাগুলি সাধনের কোন চেষ্টা করে না। এই সমস্ত বিষয়ের অনিত্যতা সম্বন্ধে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও তারা তাদের অবশ্যম্ভাবী বিনাশ দর্শন করে না।

  • শ্লোক: 7

    শ্ববিড়্ বরাহোষ্ট্রখরৈঃ
    সংস্তুতঃ পুরুষঃ পশুঃ ।
    ন যৎ কর্ণ পথোপেতো
    জাতু নাম গদাগ্রজঃ ।।
    (ভাগবত ২/৩/১৯)
  • অনুবাদঃ- কুকুর, শূকর, উট ও গর্দভের মতো মানুষেরা তাদেরই প্রশংসা করে, যারা সমস্ত অশুভ থেকে উদ্ধারকারী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দিব্য লীলাসমূহ কখনও শ্রবণ করে না।
    (শ্রীশুকদেব গোস্বামী)

  • শ্লোক: 8

    বিলে বতোরুক্রমবিক্রমান্ যে
    ন শৃণ্বতঃ কর্ণপুটে নরস্য ।
    জিহ্বাসতী দার্দুরিকেব সূত
    ন চোপগায়ত্যুরুগায়গাথাঃ ।।
    (ভাগবত ২/৩/২০)
  • অনুবাদঃ- যে ব্যক্তি ভগানের শৌর্য ও অদ্ভূত কার্যকলাপের কথা শ্রবণ করেনি এবং ভগবানের গুণগাথা কীর্তন করেনি, তার কর্ণরন্ধ্র সর্পের গর্তের মতো এবং তার জিহ্বা ভেকের জিহ্বার মতো।

  • শ্লোক: 9

    এ-ও ত’ এক কলির চেলা ।
    মাথা নেড়া, কপ্নি পরা, তিলক নাকে, গলায় মালা ।
    সহজ-ভজন করছেন মামু, সঙ্গে ল’য়ে পরের বালা ।।
    (ভক্তিবিনোদ ঠাকুর)
  • অনুবাদঃ- এ-ও তো একজন কলির প্রতিনিধি। সে মাথা নেড়া করেছে (এবং বৈষ্ণব ত্যাগীর মতো বেশ ধারণ করেছে)। কৌপীন পরিহিত হয়ে, নাকে তিলক ধারণ করে এবং গলায় কণ্ঠিমালা পরে সে খুব সহজভাবে কৃষ্ণভজন করছে। কিন্তু তার আসল উদ্দেশ্য শুধু পরস্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে অবৈধ জীবন যাপন করা।

  • শ্লোক: 10

    ন মাং দুষ্কৃতিনো মূঢ়াঃ প্রপদ্যন্তে নরাধমাঃ ।
    মায়য়াপহৃতজ্ঞানা আসুরং ভাবমাশ্রিতাঃ ॥
    (গীতা ৭/১৫)
  • অনুবাদঃ- মূঢ়, নরাধম, মায়ার দ্বারা যাদের জ্ঞান অপহৃত হয়েছে এবং যারা আসুরিক ভাবসম্পন্ন, সেই সমস্ত দুষ্কৃতকারীরা কখনও আমার শরণাগত হয় না।

  • শ্লোক: 11

    অব্যক্তং ব্যক্তিমাপন্নং মন্যন্তে মামবুদ্ধয়ঃ ।
    পরং ভাবমজানন্তো মমাব্যয়মনুত্তমম্ ॥
    (গীতা ৭/২৪)
  • অনুবাদঃ- বুদ্ধিহীন মানুষেরা, যারা আমাকে জানে না, মনে করে যে, আমি পূর্বে অব্যক্ত নির্বিশেষ ছিলাম, এখন ব্যক্তিত্ব পরিগ্রহ করেছি। তাদের অজ্ঞতার ফলে তারা আমার অব্যয় ও সর্বোত্তম পরম ভাব সম্বন্ধে অবগত নয়।

  • শ্লোক: 12

    নাহং প্রকাশঃ সর্বস্য যোগমায়াসমাবৃতঃ ।
    মূঢ়োহয়ং নাভিজানাতি লোকো মামজমব্যয়ম্ ॥
    (গীতা ৭/২৫)
  • অনুবাদঃ- আমি মূঢ় ও বুদ্ধিহীন ব্যক্তিদের কাছে কখনও প্রকাশিত হই না। তাদের কাছে আমি আমার অন্তরঙ্গা শক্তি যোগমায়ার দ্বারা আবৃত থাকি৷ তাই, তাঁরা আমার অজ ও অব্যয় স্বরূপকে জানতে পারে না।

  • শ্লোক: 13

    অবজানন্তি মাং মূঢ়া মানুষীং তনুমাশ্রিতম্ ।
    পরং ভাবমজানন্তো মম ভূতমহেশ্বরম্ ॥
    (গীতা ৯/১১)
  • অনুবাদঃ- আমি যখন মনুষ্যরূপে অবতীর্ণ হই, মূর্খেরা আমাকে অবজ্ঞা করে৷ তারা আমার পরম ভাব সম্বন্ধে অবগত নয় এবং তারা আমাকে সর্বভূতের মহেশ্বর বলে জানে না।

  • শ্লোক: 14

    মোঘাশা মোঘকর্মাণো মোঘজ্ঞানা বিচেতসঃ ।
    রাক্ষসীমাসুরীং চৈব প্রকৃতিং মোহিনীং শ্রিতাঃ ॥
    (গীতা ৯/১২)
  • অনুবাদঃ- এভাবেই যারা মোহাচ্ছন্ন হয়েছে, তারা রাক্ষসী ও আসুরী ভাবের প্রতি আকৃষ্ট হয়। সেই মোহাছন্ন অবস্থায় তাদের মুক্তি লাভের আশা, তাদের সকাম কর্ম এবং জ্ঞানের প্রয়াস সমস্তই ব্যর্থ হয়।

  • শ্লোক: 15

    প্রবৃত্তিং চ নিবৃত্তিং চ জনা ন বিদুরাসুরাঃ ৷
    ন শৌচং নাপি চাচারো ন সত্যং তেষু বিদ্যতে ॥
    (গীতা ১৬/৭)
  • অনুবাদঃ- অসুরস্বভাব ব্যক্তিরা ধর্ম বিষয়ে প্রবৃত্ত এবং অধর্ম বিষয় থেকে নিবৃত্ত হতে জানে না। তাদের মধ্যে শৌচ, সদাচার ও সত্যতা বিদ্যমান নেই।

  • (সূত্রঃ- বৈষ্ণব শ্লোকাবলী) এরপর দেখুন= অভক্ত সম্পর্কে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

  • Add_6

    আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

    সুনির্বাচিত শ্লোকঃ-

    * * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।   আপনাদের পোস্ট করা লেখাগুলো এই লিংকে আছে, দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ * * *

    জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , শেয়ার করে প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন।