শ্রীমৎ আচার্য বিবেকানন্দ গোস্বামী
এম.এ.(ট্রিপল), সপ্ততীর্থ, বি.সি.এস (শিক্ষা) প্রাক্তন সহযোগী অধ্যাপক (দর্শন) বরগুনা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ । প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশ সেবাশ্রম। -এর স্বহস্তে লিখিত গ্রন্থ
মৃত্যু হতে অমৃতলোকে
For Ad Contact
0183 45 45 989
গুরুবাক্য ও যৌগিক পন্থা (3)
যারা বর্তমান জন্মে আয়ও অবস্থানুরূপ অর্থের সদ্ব্যবহার এবং সাধন ভজন করছে না তারা আগতজন্মে দরিদ্ররূপে নানা দুঃখে দুর্দ্দশা ভোগ
অথবা পশ্বাদি যোনিতে জন্মপ্রাপ্ত হবে। “অর্থ কপুর চরনাং অভ্যাসেহ কপুয়া যোনিম। পদ্যেয়নরশ্বযোনি বা শূকর যোনিং বা চন্ডাল যোনিং বেতি”। অর্থাৎ বিধি নিষিদ্ধ শাস্ত্রে
বিরূদ্ধ পাপ কর্মানুষ্ঠান দ্বারা শীঘ্র নীচ যোনি কিংবা শূকর, কুকুর প্রভৃতি পশুযোনি অথবা গীতায় ভগবান বলেছেন-
তানহং দ্বিষতঃ ক্রুবান........................যোনিষু।
নিত্য অশুভ কর্মানুষ্ঠান রত ও দ্বেষী, ক্রুর, নরাধম প্রভৃতি অসুর প্রকৃতি মানবগনকে আমি জন্মমৃত্যু মার্গে নিপতিত করে অতি ক্রুর ব্যাঘ্র সর্পাদি যোনিতে ভ্রমন করাই।
(৫)
অতএব যারা ধন উপার্জ্জন ও বিলাসে জীবন যাপন করছে, ধর্ম-কর্ম, সাধন ও ভজন করার অবসর পান নাই তারা যদি জানতে পারেন যে আর এক বৎসর কি ছয়মাস
পরে স্ত্রী-পুত্রাদি অ সাধের ধন ও বিষয় আশায় ভবসংসারে সবছেড়ে শূন্য হস্তে নিঃসম্বল অবস্থায় অসহায় একা চলে যেতে হবে, তাহলে বিষয়ভিববাদির জন্য সবন্দোবস্ত এবং
পুন্যাদি কর্ম্মের দ্বারা পরলোকেই ইষ্টসাধন করতে পারবেন। সকল শ্রেণীর লোক যেমন ইহজীবনের সাংসারীক স্বার্থ নিয়ে তৎপর তেমনি ইহ-পরলোকের মংগল ও সুখের জন্য
সকলেরই স্ব-স্ব জাতীয় ধর্মানুষ্ঠান ও সাধন ভজন করা কর্তব্য।
সকল প্রানী অপেক্ষা মনুষ্য শ্রেষ্ঠ। এই বিশ্বসংসারে জলে - স্থলে আশি লক্ষ যোনিতে থাকতে হয় তা শাস্ত্রে নির্দিষ্ট আছে-
“স্থাবরং বিংশ লক্ষন্ত, জলজা নব লক্ষকাঃ, কৃমিজা রুদ্র লক্ষান্ত
পাশবো দশ লক্ষকাঃ; অন্তজা ত্রিংশ লক্ষান্ত চতুর্লক্ষান্ত মানবঃ”।
জলে ও স্থলে, পশুপাখী কীটপতঙ্গাদি নানারূপে আশি লক্ষ বার জন্মগ্রহন করে শেষে মানবদেহে চার লক্ষবার জন্মগ্রহন করতে হয়। মানবদেহ ধারন করে পুন্যপ্রভাবে ভারতবর্ষে
জন্মগ্রহন করে থাকে। কারন ভারতবর্ষের ন্যায় পুন্যপদ স্থান পৃথিবীর আর কোথাও নাই। প্রাণীগন বহু জন্মের পর কদাচিৎ পুন্যভূমি ভারতে মানবজন্ম লাভ করে থাকে।
শাস্ত্রে উক্ত আছে যে, ভারতবাসীরা দেবগন হইতেও শ্রেষ্ঠ এবং ধন্য, কারন তাদের জন্মভূমি স্বর্গ ও মোক্ষ উভয় লাভের হেতু স্বর্গপদ পুন্যকর্ম্ম ক্ষয় হলে আবার কিভাবে সমুদয়
ইন্দ্রিয় যুক্ত হয়ে ভারতে জন্মগ্রহন করবো দেবতারাও এই কামনা করেন। প্রকৃতপক্ষে ভারতবর্ষ পারলৌকিক কার্যানুষ্ঠানে সর্বশ্রেষ্ঠ। মর্ত্তলোকের মধ্যে এই ভারতবর্ষে বসেই মুনি
ঋষিরা তপস্যা করে থাকেন। পরলোকের আদর ও উপকারার্থ যে কিছু দান কার্য্য তাও এস্থানে সম্পাদিত হয়ে থাকে। ভারতবাসীরা পৃথিবীর মধ্যে ভারতভূমিকে কর্মভূমি
বলে ইহ-পারলৌকিক মঙ্গল উদ্দেশ্যে ধর্ম কার্য্যানুষ্ঠান করে থাকে।
জয় রাধে শ্যাম