শ্রীমৎ আচার্য বিবেকানন্দ গোস্বামী
এম.এ.(ট্রিপল), সপ্ততীর্থ, বি.সি.এস (শিক্ষা) প্রাক্তন সহযোগী অধ্যাপক (দর্শন) বরগুনা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ । প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশ সেবাশ্রম। -এর স্বহস্তে লিখিত গ্রন্থ
মৃত্যু হতে অমৃতলোকে
For Ad Contact
0183 45 45 989
গুরুবাক্য ও যৌগিক পন্থা (2)
জলৌমকর ন্যায় জীব উত্তর দেহকে অবলম্বন করে পূর্ব দেহ পরিত্যাগ করে থাকে। কিন্তু এই উত্তর দেহ পাওয়ার কারণও জীবের কর্ম। পূর্ব জন্মে যেরূপ কর্ম্ম করেছে মৃত্যুর পর তদনুরূপ দেহ
ও গুন, ধনমান, বিদ্যা-বুদ্ধি ও অদৃষ্ট পেয়ে সুখ দুঃখ ভোগ করে থাকে। এই-ই বিধির বিধি, এই-ই শাস্ত্রে লিখিত নিশ্চিত সত্য। শাস্ত্রে কথিত আছে যে, মানুষ ধর্ম্ম কর্ম্ম দ্বারা শরীর ধারণ করে
থাকে এবং কর্ম্মের বলেই মৃত্যু মুখে পতিত হয়। যথা-
“কর্মনা সুখমন্নতি দুঃখ মন্নতি কর্মনা।
জায়তে চ প্রলীয়ন্তে বর্ত্ততে কর্মনা বশায়ৎ”।
(৪)
এক ব্যক্তি রোগে, শোকে, দুঃখে ও দারিদ্রে কষ্টভোগ করছে। সে ব্যক্তি এ জীবনে কোন পাপ কার্য্য করে নাই। পরদোষ দর্শনে আমরা খুব পটু; সুতরাং অনেকেই বলবে লোকটি অনেক
পাপ করেছে, এখন কর্মের ফলভোগ করছে- এটাই না হয় স্বীকার করতেম কিন্তু ৫ম বর্ষীয় বালক বালিকা কঠিন রোগে দীর্ঘকাল কষ্ট পাচ্ছে, কেহ বা
বিকলাঙ্গ হয়ে অকর্ম্মন্য শরীর বহন করছে। ওরা তো এ জন্মে কোন পাপ কর্ম করে নাই, পাপ-পুন্য বোঝে নাই সুতরাং এ জন্মে পাপ পুন্য কিছুই নাই তবে কেন ওরা বিষম দুঃখ
কষ্ট ভোগ করছে। এসব দেখে কোন নির্বোধ বলবে যে ভগবান ওকে কষ্ট দিতেছেন।
কিন্তু ধার্মিক ও জ্ঞানবান ব্যক্তি একথা কর্ণগোচর হলে তিনি বলবেন যে- “ভগবানের কোন দোষ নাই” ওর জন্মান্তরীন কর্ম্ম ফলে ও এ জন্মে দুর্দ্দশা ভোগ করছে, বাস্তবিক এ
কথা সত্য। পূর্বেই বলেছি ভগবান সর্বজীবে সমান দয়া করেন এবং সমদৃষ্টিতে সকলকে দেখে থাকেন। সুতরং ওরা যে পূর্ব জন্মের নিজকৃত কর্মফল ভোগ করছে, এ জন্মের দুঃখ দুর্দ্দশা
তার সত্যতা প্রতিপন্ন করছে। অতএব কর্ম্মানুযায়ী ফলভোগ অবশ্যই করতে হবে।
যারা মনুষ্যকুলে জন্মগ্রহন করে ধনোপার্জন, পরিবার পোষন ও ভোগবিলাসে দিনযাপন করাই মানব জীবনের চরমোন্নতি এবং একমাত্র কর্তব্য স্থির করে নিশ্চিন্ত, যারা ধনসংগ্রহ যশ
মান প্রভৃতির আশায় সর্বদা ব্যতিব্যস্ত, যারা ধর্মের ধার ধারে না, ভ্রমেও ভগবানের নাম স্মরণ করে না এদের সকলেরই পরজন্মের সুখের পথ কন্টকাকীর্ণ। পূর্বজন্মের সৎকর্মের ফলে
এজন্মে ধনী হয়েছে কিন্তু এ জন্মে ধর্ম্মে কর্ম্মে রত থেকে অর্থের সদ্ব্যবহার ও সাধন ভজনাদি না করলে পরজন্মে দুঃখ দরিদ্রতা অবশ্যই হবে। অসীম ধীশক্তিশালী তীক্ষ্ণবুদ্ধি পন্ডিত চানক্য
বলেছেন, “কর্ম দোষণ দরিদ্রতা”।
সত্য কথা। যারা পূর্ব জন্মে ধর্মার্থে পূন্যার্থে অর্থের সদ্ব্যবহার করে নাই তারাই বর্তমান জন্মে দরিদ্রতার ভীষন আবর্তে পড়ে হাবুডাবু খাচ্ছে। যারা বর্তমান জন্মে আয়ও অবস্থানুরূপ অর্থের
সদ্ব্যবহার এবং সাধন ভজন ......
জয় রাধে শ্যাম