শ্রীমৎ আচার্য বিবেকানন্দ গোস্বামী
এম.এ.(ট্রিপল), সপ্ততীর্থ, বি.সি.এস (শিক্ষা) প্রাক্তন সহযোগী অধ্যাপক (দর্শন) বরগুনা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ । প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশ সেবাশ্রম। -এর স্বহস্তে লিখিত গ্রন্থ
মৃত্যু হতে অমৃতলোকে
For Ad Contact
0183 45 45 989
মাতার কর্তব্য (3)
আমাদের দেশের মেয়েদের রান্না-বাড়া, ঘর উঠান ঝাড়ু দেওয়া, জল তোলা, বাটনা বাটা, কুটনা কুটা, এইসব কার্য্য করলেই প
্রসব সময়ে আর কষ্ট পেতে হয় না। সুখে ও সহজে প্রসব হওয়ার এরূপ উপায় আর নাই।
প্রসুতির খাদ্যের ব্যবস্থা
সন্তান জন্মাবার দিন হতে ৬দিন পর্যন্ত প্রসূতিকে শুধু ঘি ও কালজিরা বাটা দিয়া ভাত ১ বেলা দিবে, বৈকালে দুধ-রুটি বা সাবু দিবে। ৬ দিন পর্যন্ত ডাল, তরকারী,
মাছ প্রভৃতি কিছুই খেতে দিবে না। যদি একান্তপক্ষে উহা খেতে কষ্ট বোধ হয় বা না পারে তবে আলু-পটল, কাঁচকলা ভাতে দিয়ে খাবে। ক্রমান্বয়ে ডাল-মাছ দেয়া
যেতে পারে। কিন্তু ১ মাস পর্যন্ত প্রত্যহ কালজিরা বাটা ও ঘি কতক খাওয়ান বিশেষ উচিত। কারণ প্রসূতির কাঁচা নাড়ীতে গুরুপাক জিনিস খেলে অনেক রোগই হতে পারে।
সূতিকা রোগ হবার ইহা প্রধান কারণ।
সূতিকা রোগ না হবার উপায়
প্রসূতিকে পূর্বলিখিত ব্যবস্থামত খাদ্য দিবে ও ১ মাস পর্য্যন্ত প্রসূতির গৃহে অগ্নি সর্বদা রেখে অগ্নি সেবা করতে দিবে। শিশুকেও কিছুদিন পর্যন্ত অগ্নিতে নেকড়া গরম করে
সমস্ত শরীর সেক দিতে হয়, তাতে শিশুর কফের দোষ নষ্ট হয়ে থাকে। এই অগ্নি সেক ও বিধিমত আহার করলে কোন প্রসূতিরই সূতিকা রোগ হবে না। পাড়াগাঁয়ে এ
ব্যবস্থা অধিকাংশ গৃহেই আছে। কিন্তু বর্তমানে যে সব লোক এসব ব্যবস্থা মত চলে না, দেখা যায় তাদের মধ্যেই সূতিকা রোগ বেশী হয়ে থাকে।
প্রসূতিকে মাটিতে শুইতে দিবে। ঘুমান্তাকালে অনেকেই ঠান্ডা লাগায় ভয়ে খাট-চৌকিতে শুতে দিয়ে থাকে; কিন্তু খাট-চৌকিতে শরীরের রস টানার ক্ষমতা নাই, বরঞ্চ
বৃদ্ধিই হয়ে থাকে। যে সব লোক খাট-চৌকিতে শুয়ে থাকে তাদেরই বাতের ব্যারাম বেশী হয়। মাটির একটা রস টানার আশ্চার্য ক্ষমতা আছে পরীক্ষা করলে বুঝতে পারা যায়।
যোগী সন্ন্যাসীদের শরীরে রস বৃদ্ধি না হবার জন্য মাটিতে শোয়ার ব্যবস্থা আছে। মনে করবে না যে, তারা খাট-চৌকি কোথায় পাবে, সেজন্য ভূমি শয্যায় শুয়ে থাকে।
কিন্তু তা নয়। ভূমি শয্যাই শরীরের পক্ষে উত্তম।
সূতিকা রোগ হবার কারণ
সূতিকা রোগ হবার প্রধান কারণ বিরুদ্ধ ভোজন। প্রসবের পরই ডাল, মাছ, তরকারি ও অন্যান্য গুরুপাক জিনিস ভোজন করায় তা হজম হয় না বলে শরীর রসে পূর্ণ হয়।
সেই রস পরিপাক করার শক্তি প্রসূতির কাঁচা নাড়ীতে থাকে না ও অপরিপক্ক রস ক্রমান্বয়ে বায়ুকে আশ্রয় করে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়, তাতেই জ্বর হয়, হজম শক্তি কমে যায়, পেটে
নানারূপ অসুখ হয়, মাথা ঘোরে, শেষে নানারূপ উপসর্গ উপস্থিত হয়। সূতিকা রোগ একবার হলে আর সহজে যেতে চায় না।
জয় রাধে শ্যাম