শ্লোক: | =অনুবাদ= |
শ্লোক:1: শ্রীভগবানুবাচ পরং ভূয়ঃ প্রবক্ষ্যামি জ্ঞানানাং জ্ঞানমুত্তমম্। যজ্ জ্ঞাত্বা মুনয়ঃ সর্বে পরাং সিদ্ধিমিতো গতাঃ॥১॥ পরম্, ভূয়ঃ, প্রবক্ষ্যামি, জ্ঞানানাম্, জ্ঞানম্, উত্তমম্, যৎ, জ্ঞাত্বা, মুনয়ঃ, সর্বে, পরাম্, সিদ্ধিম্, ইতঃ, গতাঃ॥১॥ |
অর্থ:- পরমেশ্বর ভগবান বললেন- পুনরায় আমি তোমাকে সমস্ত জ্ঞানের মধ্যে সর্বোত্তম জ্ঞান সম্বন্ধে বলব, যা জেনে মুনিগণ এই জড় জগৎ থেকে পরম সিদ্ধি লাভ করেছিলেন। |
শ্লোক:2: ইদং জ্ঞানমুপাশ্রিত্য মম সাধর্ম্যমাগতাঃ । সর্গেহপি নোপজায়ন্তে প্রলয়ে ন ব্যথন্তি চ ॥২॥ ইদম্, জ্ঞানম্, উপাশ্রিত্য, মম, সাধর্ম্যম্, আগতাঃ, সর্গে, অপি, ন, উপজায়ন্তে, প্রলয়ে, ন, ব্যথন্তি, চ ॥২॥ |
অর্থ:- এই জ্ঞান আশ্রয় করলে জীব আমার পরা প্রকৃতি লাভ করে। তখন আর সে সৃষ্টির সময়ে জন্মগ্রহণ করে না এবং প্রলয়কালেও ব্যথিত হয় না। |
শ্লোক:3: মম যোনির্মহদ্ ব্রহ্ম তস্মিন্ গর্ভং দধাম্যহম্। সম্ভবঃ সর্বভূতানাং ততো ভবতি ভারত ॥৩॥ মম, যোনিঃ, মহৎ, ব্রহ্ম, তস্মিন্, গর্ভম্, দধামি, অহম্, সম্ভবঃ, সর্বভূতানাম্, ততঃ, ভবতি, ভারত ॥৩॥ |
অর্থ:- হে ভারত ! প্রকৃতি সংজ্ঞক ব্রহ্ম আমার যোনিস্বরূপ এবং সেই ব্রহ্মে আমি গর্ভাধান করি, যার ফলে সমস্ত জীবের জন্ম হয়। |
শ্লোক:4: সর্বযোনিষু কৌন্তেয় মূর্তয়ঃ সম্ভবন্তি যাঃ । তাসাং ব্রহ্ম মহদ্ যোনিরহং বীজপ্রদঃ পিতা ॥৪॥ সর্বযোনিষু, কৌন্তেয়, মূর্তয়ঃ, সম্ভবন্তি, যাঃ, তাসাম্, ব্রহ্ম, মহৎ, যোনিঃ, অহম্, বীজপ্রদঃ, পিতা ॥৪॥ |
অর্থ:- হে কৌন্তেয় ! সকল যোনিতে যে সমস্ত মূর্তি প্রকাশিত হয়, ব্রহ্মরূপী যোনিই তাদের জননী-স্বরূপা এবং আমি তাদের বীজ প্রদানকারী পিতা। |
শ্লোক:5: সত্ত্বং রজস্তম ইতি গুণাঃ প্রকৃতিসম্ভবাঃ । নিবধ্নন্তি মহাবাহো দেহে দেহিনমব্যয়্ম্ ॥৫॥ সত্ত্বম্, রজঃ, তমঃ, ইতি, গুণাঃ, প্রকৃতি-সম্ভবাঃ, নিবধ্নন্তি, মহাবাহো, দেহে, দেহিনম্, অব্যয়্ম্ ॥৫॥ |
অর্থ:- হে মহাবাহো ! জড়া প্রকৃতি থেকে জাত সত্ত্ব, রজ ও তম- এই তিনটি গুণ এই দেহের মধ্যে অবস্থিত অব্যয় জীবকে আবদ্ধ করে। |
শ্লোক:6: তত্র সত্ত্বং নির্মলত্বাৎ প্রকাশকমনাময়ম্ । সুখেসঙ্গেন বধ্নাতি জ্ঞানসঙ্গেন চানঘ ॥৬॥ তত্র, সত্ত্বম্, নির্মলত্বাৎ, প্রকাশকম্, অনাময়ম্, সুখেসঙ্গেন, বধ্নাতি, জ্ঞানসঙ্গেন, চ, অনঘ ॥৬॥ |
অর্থ:- হে নিষ্পাপ ! এই তিনটি গুণের মধ্যে সত্ত্বগুণ নির্মল হওয়ার ফলে প্রকাশকারী ও পাপশূন্য এবং সুখ ও জ্ঞানের সঙ্গের দ্বারা জীবকে আবদ্ধ করে। |
শ্লোক:7: রজো রাগাত্মকং বিদ্ধি তৃষ্ণাসঙ্গসমুদ্ভবম্ । তন্নিবধ্নাতি কৌন্তেয় কর্মসঙ্গেন দেহিনম্ ॥৭॥ রজঃ, রাগাত্মকম্, বিদ্ধি, তৃষ্ণা-আসঙ্গ-সম-উদ্ভবম্, তৎ, নিবধ্নাতি, কৌন্তেয়, কর্মসঙ্গেন, দেহিনম্ ॥৭॥ |
অর্থ:- হে কৌন্তেয় ! রজোগুণ অনুরাগাত্মক এবং তা তৃষ্ণা ও আসক্তি থেকে উৎপন্ন বলে জানবে এবং সেই রজোগুণই জীবকে সকাম কর্মের আসক্তির দ্বারা আবদ্ধ করে। |
শ্লোক:8: তমস্ত্বজ্ঞানজং বিদ্ধি মোহনং সর্বদেহিনাম্ । প্রমাদলস্যনিদ্রাভিস্তন্নিবধ্নাতি ভারত ॥৮॥ তমঃ, তু, অজ্ঞানজম্, বিদ্ধি, মোহনম্, সর্বদেহিনাম্, প্রমাদ-আলস্য-নিদ্রাভিঃ, তৎ, নিবধ্নাতি, ভারত ॥৮॥ |
অর্থ:- হে ভারত ! অজ্ঞানজাত তমোগুণকে সমস্ত জীবের মোহনকারী বলে জানবে। সেই তমোগুণ প্রমাদ, আলস্য ও নিদ্রার দ্বারা জীবকে আবদ্ধ করে। |
শ্লোক:9: সত্ত্বং সুখে সঞ্জয়তি রজঃ কর্মণি ভারত । জ্ঞানমাবৃত্য তু তমঃ প্রমাদে সঞ্জয়ত্যুত ॥৯॥ সত্ত্বম্, সুখে, সঞ্জয়তি, রজঃ, কর্মণি, ভারত, জ্ঞানম্, আবৃত্য, তু, তমঃ, প্রমাদে, সঞ্জয়তি, উত ॥৯॥ |
অর্থ:- হে ভারত ! সত্ত্বগুণ জীবকে সুখে আবদ্ধ করে, রজোগুণ জীবকে সকাম কর্মে আবদ্ধ করে, এবং তমোগুণ প্রমাদে আবদ্ধ করে। |
শ্লোক:10: রজস্তমশ্চাভিভূয় সত্ত্বং ভবতি ভারত । রজঃ সত্ত্বং তমশ্চৈব তমঃ সত্ত্বং রজস্তথা ॥১০॥ রজঃ, তমঃ, চ, অভিভূয়, সত্ত্বম্, ভবতি, ভারত, রজঃ, সত্ত্বম্, তমঃ, চ, এব, তমঃ, সত্ত্বম্, রজঃ, তথা ॥১০॥ |
অর্থ:- হে ভারত ! রজ ও তমোগুণকে পরাভূত করে সত্ত্বগুণ প্রবল হয়, সত্ত্ব ও তমোগুণকে পরাভূত করে রজোগুণ প্রবল হয় এবং সেভাবেই সত্ত্ব ও রজোগুণকে পরাভূত করে তমোগুণ প্রবল হয়। |
শ্লোক:11: সর্বদ্বারেষু দেহেহস্মিন্ প্রকাশ উপজায়তে । জ্ঞানং যদা তদা বিদ্যাদ্ বিবৃদ্ধং সত্ত্বমিত্যুত ॥১১॥ সর্বদ্বারেষু, দেহে, অস্মিন্, প্রকাশঃ, উপজায়তে, জ্ঞানম্, যদা, তদা, বিদ্যাৎ, বিবৃদ্ধম্, সত্ত্বম, ইতি, উত ॥১১॥ |
অর্থ:-য্খন এই দেহের সব কয়টি দ্বারে জ্ঞানের প্রকাশ হয়, তখন সত্ত্বগুণ বর্ধিত হয়েছে বলে জানবে। |
শ্লোক:12: লোভঃ প্রবৃত্তিরারম্ভঃ কর্মণামশমঃ স্পৃহা । রজস্যেতানি জায়ন্তে বিবৃদ্ধে ভরতর্ষভ ॥১২॥ লোভঃ, প্রবৃত্তিঃ, আরম্ভঃ, কর্মণাম, অশমঃ, স্পৃহা, রজসি, এতানি, জায়ন্তে, বিবৃদ্ধে, ভরতর্ষভ ॥১২॥ |
অর্থ:- হে ভরতশ্রেষ্ঠ ! রজোগুণ বর্ধিত হলে লোভ, প্রবৃত্তি, কর্মে উদ্যম, ও দুর্দমনীয় স্পৃহা বৃদ্ধি পায় । |
শ্লোক:13: অপ্রকাশোহপ্রবৃত্তিশ্চ প্রমাদো মোহ এব চ । তমস্যেতানি জায়ন্তে বিবৃদ্ধে কুরুনন্দন ॥১৩॥ অপ্রকাশঃ, অপ্রবৃত্তিঃ, চ, প্রমাদঃ, মোহঃ, এব, চ, তমসি, এতানি, জায়ন্তে, বিবৃদ্ধে, কুরুনন্দন ॥১৩॥ |
অর্থ:- হে কুরুনন্দন ! তমোগুণ বর্ধিত হলে, অজ্ঞান-অন্ধকার, নিষ্ক্রিয়্তা, প্রমাদ ও মোহ উৎপন্ন হয়। |
শ্লোক:14: যদা সত্ত্বে প্রবৃদ্ধে তু প্রলয়ং যাতি দেহভৃৎ । তদোত্তমবিদাং লোকানমলান্ প্রতিপদ্যতে ॥১৪॥ যদা, সত্ত্বে, প্রবৃদ্ধে, তু, প্রলয়ম্, যাতি, দেহভৃৎ, তদা, উত্তমবিদাম্, লোকান্, অমলান্, প্রতিপদ্যতে ॥১৪॥ |
অর্থ:- য্খন সত্ত্বগুণ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত কালে দেহ্ধারী জীব দেহ্ত্যাগ করেন, তখন তিনি মহর্ষিদের নির্মল উচ্চতর লোকসমূহ লাভ করেন। |
শ্লোক:15: রজসি প্রলয়ং গত্বা কর্মসঙ্গিষু জায়তে । তথা প্রলীনস্তমসি মূঢ়যোনিষু জায়তে ॥১৫॥ রজসি, প্রলয়ম্, গত্বা, কর্মসঙ্গিষু, জায়তে, তথা, প্রলীনঃ, তমসি, মূঢ়যোনিষু, জায়তে ॥১৫॥ |
অর্থ:- রজোগুণে মৃত্যু হলে কর্মাসক্ত মনুষ্যকুলে জন্ম হয়, তেমনই তমোগুণে মৃত্যু হলে পশুযোনিতে জন্ম হয়। |
শ্লোক:16: কর্মণঃ সুকৃতস্যাহুঃ সাত্ত্বিকং নির্মলং ফলম্ । রজসস্তু ফলং দুঃখমজ্ঞানং তমসঃ ফলম্ ॥১৬॥ কর্মণঃ, সুকৃতস্য, আহুঃ, সাত্ত্বিকম্, নির্মলম্, ফলম্, রজসঃ, তু, ফলম্, দুঃখম্, অজ্ঞানম্, তমসঃ, ফলম্ ॥১৬॥ |
অর্থ:- সুকৃতি-সম্পন্ন সাত্ত্বিক কর্মের ফলকে নির্মল, রাজসিক কর্মের ফলকে দুঃখ এবং তামসিক কর্মের ফলকে অজ্ঞান বা অচেতন বলা হয়। |
শ্লোক:17: সত্ত্বাৎ সংজায়তে জ্ঞানং রজসো লোভ এব চ । প্রমাদমোহৌ তমসো ভবতোহজ্ঞানমেব চ ॥১৭॥ সত্ত্বাৎ, সংজায়তে, জ্ঞানম্, রজসঃ, লোভঃ, এব, চ, প্রমাদ-মোহৌ, তমসঃ, ভবতঃ, অজ্ঞানম্, এব, চ ॥১৭॥ |
অর্থ:- সত্ত্বগুণ থেকে জ্ঞান, রজোগুণ থেকে লোভ এবং তমোগুণ থেকে অজ্ঞান, প্রমাদ ও মোহ উৎপন্ন হয়। |
শ্লোক:18: উর্ধ্বং গচ্ছন্তি সত্ত্বস্থা মধ্যে তিষ্ঠন্তি রাজসাঃ । জঘন্যগুণবৃত্তিস্থা অধো গচ্ছন্তি তামসাঃ ॥১৮॥ উর্ধ্বম্, গচ্ছন্তি, সত্ত্বস্থাঃ, মধ্যে, তিষ্ঠন্তি, রাজসাঃ, জঘন্য-গুণ-বৃত্তিস্থাঃ, অধঃ, গচ্ছন্তি, তামসাঃ ॥১৮॥ |
অর্থ:- সত্ত্বগুণ- সম্পন্ন ব্যক্তিগণ উর্ধ্বে উচ্চতর লোকে গমন করে, রজোগুণ-সম্পন্ন ব্যক্তিগণ মধ্যে নরলোকে অবস্থান করে এবং জঘন্য গুণসম্পন্ন তামসিক ব্যক্তিগণ অধঃপতিত হয়ে নরকে গমন করে। |
শ্লোক:19: নান্যং গুণেভ্যঃ কর্তারং যদা দ্রষ্টানুপশ্যতি । গুণেভ্যশ্চ পরং বেত্তি মদ্ভাবং সোহধিগচ্ছতি ॥১৯॥ ন, অন্যম্, গুণেভ্যঃ, কর্তারম্, যদা, দ্রষ্টা, অনুপশ্যতি, গুণেভ্যঃ, চ, পরম্, বেত্তি, মৎ-ভাবম্, সঃ, অধিগচ্ছতি ॥১৯॥ |
অর্থ:- জীব যখন দর্শন করেন যে, প্রকৃতির গুণসমূহ ব্যতীত কর্মে অন্য কোন কর্তা নেই এবং জানতে পারেন যে, পরমেশ্বর ভগবান এই সমস্ত গুণের অতীত, তখন তিনি আমার পরা প্রকৃতি লাভ করেন। |
শ্লোক:20: গুণানেতানতীত্য ত্রীন্ দেহী দেহসমুদ্ভবান্ । জন্মমৃত্যুজরাদুঃখৈর্বিমুক্তোহমৃতমশ্নুতে ॥২০॥ গুণান্, এতান্, অতীত্য, ত্রীন্, দেহী, দেহসমুদ্ভবান্, জন্ম-মৃত্যু-জরা-দুঃখৈঃ, বিমুক্তঃ, অমৃতম্, অশ্নুতে ॥২০॥ |
অর্থ:- দেহধারী জীব এই তিন গুণ অতিক্রম করে জন্ম, মৃত্যু, জরা ও দুঃখ থেকে বিমুক্ত হয়ে অমৃত ভোগ করেন। |
শ্লোক:21: অর্জুন উবাচ কৈর্লিঙ্গৈস্ত্রীন্ গুণানেতানতীতো ভবতি প্রভো । কিমাচারঃ কথং চৈতাংস্ত্রীন্ গুণানতিবর্ততে ॥২১॥ কৈঃ, লিঙ্গৈঃ, ত্রীন্, গুণান্, এতান্, অতীতঃ, ভবতি, প্রভো, কিমাচারঃ, কথম্, চ, এতান্, ত্রীন্, গুণান্, অতিবর্ততে ॥২১॥ |
অর্থ:- অর্জুন জিজ্ঞাসা করলেন- হে প্রভু ! যিনি প্রকৃতির তিন গুণের অতীত, তিনি কি কি লক্ষণ দ্বারা জ্ঞাত হন ? তাঁর আচারণ কি রকম ? এবং তিনি কিভাবে এই তিন গুণ অতিক্রম করেন ? |
শ্লোক:22: শ্রীভগবানুবাচ প্রকাশং চ প্রবৃত্তিং চ মোহমেব চ পাণ্ডব । ন দেষ্টি সংপ্রবৃত্তানি ন নিবৃত্তানি কাঙ্ক্ষতি ॥২২॥ প্রকাশম্, চ, প্রবৃত্তিম্, চ, মোহম্, এব, চ, পাণ্ডব, ন, দেষ্টি, সংপ্রবৃত্তানি, ন, নিবৃত্তানি, কাঙ্ক্ষতি ॥২২॥ শ্লোক:23: উদাসীনবদাসীনো গুণৈর্যো ন বিচাল্যতে। গুণা বর্তন্ত ইত্যেবং যোহবতিষ্ঠতি নেঙ্গতে ॥২৩॥ উদাসীন-বৎ, আসীনঃ, গুণৈঃ, যঃ, ন, বিচাল্যতে, গুণাঃ, বর্তন্তে, ইতি, এবং, যঃ, অবতিষ্ঠতি, ন, ইঙ্গতে ॥২৩॥ শ্লোক:24: সমদুঃখসুখঃ স্বস্থঃ সমলোষ্ট্রাশ্মকাঞ্চনঃ । তুল্যপ্রিয়াপ্রিয়ো ধীরস্ত্তল্যোনিন্দাত্মসংস্তুতিঃ ॥২৪॥ সম-দুঃখসুখঃ, স্বস্থঃ, সম-লোষ্ট্র-অশ্ম-কাঞ্চনঃ, তুল্য-প্রিয়-অপ্রিয়ঃ, ধীরঃ, তুল্য-নিন্দা-আত্ম-সংস্তুতিঃ ॥২৪॥ শ্লোক:25: মানাপোমানয়োস্ত্তল্যস্ত্তল্যো মিত্রারিপক্ষয়োঃ। সর্বারম্ভপরিত্যাগী গুণাতীতঃ সঃ উচ্যতে ॥২৫॥ মান-অপোমানয়োঃ, তুল্যঃ, তুল্যঃ, মিত্র-অরি-পক্ষয়োঃ, সর্ব-আরম্ভ-পরিত্যাগী, গুণাতীতঃ, সঃ, উচ্যতে ॥২৫॥ |
অর্থ:- পরমেশ্বর ভগবান বললেন- হে পাণ্ডব ! যিনি প্রকাশ, প্রবৃত্তি ও মোহ আবির্ভূত হলে দ্বেষ করেন না এবং সেগুলি নিবৃত্ত হলেও আকাঙ্ক্ষা করেন না; যিনি উদাসীনের মতো অবস্থিত থেকে গুণসমূহের দ্বারা বিচলিত হন না, কিন্তু গুণ সমূহ স্বীয় কার্যে প্রবৃত্ত হয়, এভাবেই জেনে অবস্থান করেন এবং তার দ্বারা চঞ্চলতা প্রাপ্ত হন না; যিনি আত্মস্বরূপে অবস্থিত এবং সুখ ও দুঃখে সম-ভাবাপন্ন; যিনি মাটির ঢেলা, পাথর ও স্বর্ণে সমদৃষ্টি-সম্পন্ন; যিনি প্রিয় ও অপ্রিয় বিষয়ে সম-ভাবাপন্ন; যিনি ধৈর্যশীল এবং নিন্দা, স্তুতি, মান ও অপমানে সম-ভাবাপন্ন; যিনি শত্রু ও মিত্র উভয়ের প্রতি সমভাব-সম্পন্ন এবং যিনি সমস্ত কর্মোদ্যম পরিত্যাগী- তিনিই গুণাতীত বলে কথিত হন। |
শ্লোক:26: মা চ যোহব্যভিচারেণ ভক্তিযোগেন সেবতে। স গুণান্ সমতীত্যৈতান্ ব্রহ্মভূয়ায় কল্পতে ॥২৬॥ মাম্, চ, যঃ, অব্যভিচারেণ, ভক্তিযোগেন, সেবতে, সঃ, গুণান্, সম্,-অতীত্য, এতান্, ব্রহ্মভূয়ায়, কল্পতে ॥২৬॥ |
অর্থ:- যিনি ঐকান্তিক ভক্তিযোগ সহকারে আমার সেবা করেন, তিনি প্রকৃতির সমস্ত গুণকে অতিক্রম করে ব্রহ্মভূত স্তরে উন্নীত হন। |
শ্লোক:27: ব্রহ্মণো হি প্রতিষ্ঠাহমমৃতস্যাব্যয়স্য চ । শাশ্বতস্য চ ধর্মস্য সুখস্যৈকান্তিকস্য চ ॥২৭॥ ব্রহ্মণঃ, হি, প্রতিষ্ঠা, অহম্, অমৃতস্য, অব্যয়স্য, চ , শাশ্বতস্য, চ, ধর্মস্য, সুখস্য, ঐকান্তিকস্য, চ ॥২৭॥ |
অর্থ:- অমিই নির্বিশেষ ব্রহ্মের প্রতিষ্ঠা বা আশ্রয়। অব্যয় অমৃতের, শাশ্বত ধর্মের এবং ঐকান্তিক সুখের আমিই আশ্রয়। | ওঁ তৎসদিতি শ্রীমদ্ভগবদ্গীতাসূপনিষৎসু ব্রহ্মবিদ্যায়াং যোগশাস্ত্রে শ্রীকৃষ্ণার্জুনসংবাদে 'গুণত্রয়বিভাগযোগো ' নাম চতুর্দশোঽধ্যায়ঃ ॥১৪॥ |